বাংলাদেশের জার্সিতে হামজা চৌধুরীর অভিষেক: সুযোগ-সুবিধা ও ব্যয় বিশ্লেষণ
ভারত ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে প্রথমবার মাঠে নেমেছেন হামজা চৌধুরী। সিলেটে পৌঁছাতেই পেয়েছিলেন রাজকীয় সংবর্ধনা। তার আগমনে বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। তবে জাতীয় দলে তার সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ফুটবল মহলে ব্যাপক কৌতূহল রয়েছে।
হামজার ভ্রমণ ও আবাসনের সুবিধা
হামজা চৌধুরী ইংল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার জন্য বিজনেস ক্লাসের টিকিট পেয়েছেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এ সুবিধা প্রদান করেছে, যা দীর্ঘ ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করেছে। তবে ঢাকা-শিলং ও গৌহাটি-ঢাকা রুটে তিনি দলের অন্যদের সঙ্গে ইকোনমি ক্লাসেই ভ্রমণ করেছেন।
শিলংয়ে দলের অন্যান্য খেলোয়াড়দের মতো হামজা সাধারণ সিঙ্গেল রুমেই অবস্থান করেছেন। ঢাকার টিম হোটেলে তার জন্য একটি বিশেষ সিঙ্গেল কক্ষ বরাদ্দ করা হয়েছিল, তবে এটি বাফুফের নয়, বরং হোটেল কর্তৃপক্ষের সৌজন্যে ছিল।
দলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার অভিজ্ঞতা
জাতীয় দলের ম্যানেজার আমের খানের মতে, হামজা অত্যন্ত অমায়িক ও বন্ধুবৎসল একজন ব্যক্তি। তিনি দলের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে নিয়েছেন এবং অতিরিক্ত কোনো চাহিদা প্রকাশ করেননি।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সুবিধা
জাতীয় দলের ফুটবলারদের সুনির্দিষ্ট কোনো ম্যাচ ফি নেই।
ক্যাম্পে থাকলে প্রতিজন খেলোয়াড় ২০,০০০ টাকা পেয়ে থাকেন।
ফুটবলারদের কিট (জার্সি, ট্র্যাকস্যুট) দেওয়া হলেও বুট ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিজেদের কিনতে হয়।
ইনজুরির ক্ষেত্রে ফিফার ক্লাব প্রটেকশন স্কিমের আওতায় ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা রয়েছে।
হামজার জন্য ব্যয় ও পৃষ্ঠপোষকতা
বাফুফে এখনও নিশ্চিত করেনি যে হামজা অন্য খেলোয়াড়দের মতো ২০,০০০ টাকাই পেয়েছেন, নাকি তার সম্মানী বেশি ছিল।
তবে হামজার অভিষেক উপলক্ষে কিছু সৌজন্যমূলক ব্যয় হয়েছে, যা ফেডারেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে এসেছে, নাকি সভাপতি তাবিথ আউয়াল নিজে বহন করেছেন, তা পরিষ্কার নয়। ইউসিবি ব্যাংক ও বাফুফের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয় যে, হামজার সফরে ইউসিবির আর্থিক সহায়তা রয়েছে।
ফেডারেশনের অভ্যন্তরীণ সূত্র অনুযায়ী, হামজার বিজনেস ক্লাস টিকিট ও আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা বাবদ আনুমানিক ৫-৬ হাজার ডলার ব্যয় হয়েছে। তবে এটি শুধুই অনুমান এবং নির্দিষ্ট আর্থিক বিবরণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
হামজা চৌধুরীর অভিষেক বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তার জন্য বাফুফে বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে, তবে তা অন্য খেলোয়াড়দের তুলনায় কতটা ব্যতিক্রমী ছিল, তা এখনো আলোচনার বিষয়। হামজার পারফরম্যান্স এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তদের জন্য বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকবে।