বাংলাদেশ বনাম ভারত: গোলশূন্য সমতায় শেষ হলো ফুটবলের লড়াই

 

Bangladesh vs India Asian Cup
ভারতের লিস্টন কোলাচোর সঙ্গে বল দখলের লড়াই বাংলাদেশের হামজা চৌধুরীর। এআইএফএফ

কিক অফের পরেই সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। শাহরিয়ার ইমন কিক অফের শট নিলেন হামজা চৌধুরীর উদ্দেশে। তিনি বল রিসিভ করেই ডান দিকে লং পাস বাড়ালেন। কিন্তু মজিবুর রহমান জনি প্রস্তুত ছিলেন না, ভারতীয় গোলকিপার বিশাল কাইথ বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে সরাসরি জনির পায়ে তুলে দেন! ফাঁকা পোস্টের সামনে দাঁড়িয়ে থেকেও দূরূহ কোণ থেকে বাইরের জাল কাঁপালেন জনি, নষ্ট হলো দারুণ এক সুযোগ।

বাংলাদেশ একের পর এক সুযোগ পেল, কাজে লাগাতে পারল না

এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডে ভারতের বিপক্ষে মঙ্গলবার চেনা মাঠে একাধিক সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। তবে গোলের দেখা মেলেনি। অন্যদিকে, অবসর ভেঙে ফেরা ভারতীয় তারকা সুনিল ছেত্রিও ছিলেন নিষ্প্রভ। শেষ পর্যন্ত দুই দলের লড়াই গোলশূন্য সমতায় শেষ হয়।

শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। দশম মিনিটে শাকিল আহাদ তপুর ক্রসে ইমনের হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। এরপর রাকিব ও জনির আক্রমণ এক ডিফেন্ডার কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করেন। কর্নার নিতে আসেন হামজা চৌধুরী, তবে গ্যালারি থেকে দুয়ো ধ্বনি শোনা যায়। অথচ কিক অফের সময় তার নাম ঘোষণায় দর্শকরা উল্লাস করেছিল!

হামজার কর্নার গ্লাভসে নেয়ার পর ভারতের গোলকিপার বিশাল কাইথের ভুলে আবারও সুযোগ পায় বাংলাদেশ। তার গোল কিক শাকিল আহাদের পিঠে লেগে বল চলে যায় বক্সের ভেতরে থাকা হৃদয়ের পায়ে। মিডফিল্ডার হৃদয়ের শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান শুভাশিষ বোস।

অষ্টাদশ মিনিটে শেখ মোরসালিনের ক্রসে ইমন ঠিকঠাক মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। পোস্টে বল থাকলে ম্যাচের ডেডলক ভাঙতে পারত বাংলাদেশ।

ভারতের আক্রমণ ও ছেত্রির ব্যর্থতা

প্রথমার্ধের শেষদিকে ভারত আক্রমণে উঠতে থাকে। ৩১তম মিনিটে লিস্টন কোলাসোর ক্রসে উদান্তা সিংয়ের হেড গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন শাকিল আহাদ। এরপর ফারুক চৌধুরীর ফিরতি শট দুর্দান্তভাবে আটকে দেন বাংলাদেশ গোলকিপার মিতুল।

দ্বিতীয়ার্ধে ভারত ছন্দ ফিরে পায়। ৫৫তম মিনিটে কোলাসোর ক্রসে ছেত্রি লাফিয়ে উঠেও বলের নাগাল পাননি। একটু পর তার হেড হামজা চৌধুরী লাফিয়ে ব্লক করেন। ভারত হ্যান্ডবলের আবেদন জানালেও রেফারি সাড়া দেননি।

৬২তম মিনিটে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ইমন ও জনিকে তুলে এনে মাঠে নামান ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও চন্দন রায়কে।

৭২তম মিনিটে বাংলাদেশের ভুলে সুযোগ পায় ভারত। সাদউদ্দিনের ব্যাক পাস ধরতে গিয়ে পিছলে যান তিনি, বল চলে যায় ছেত্রির কাছে। তবে তার ছোট পাস থেকে সুরেশ সিংজাঙ্গমের শট চলে যায় পোস্টের বাইরে।

৮৫তম মিনিটে ভারতের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছেত্রিকে তুলে নেন কোচ, বদলি নামেন ইরফান ওয়াদুদ। শেষ দিকে ফাহিমের শট আটকান কাইথ, আর যোগ করা সময়ে রাকিবের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে গেলে গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ হয় ম্যাচটি।

সমতায় শেষ, তবে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক দিক

যদিও বাংলাদেশ গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে, তবু ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে সমতা ধরে রাখাটা বড় প্রাপ্তি। বিশেষ করে রক্ষণভাগে কাজী তারিক রায়হান ও মিতুল মারমার পারফরম্যান্স ছিল প্রশংসনীয়।

বাংলাদেশের জন্য সামনে কী অপেক্ষা করছে?

এই ড্র বাংলাদেশকে গ্রুপ পরবর্তী ধাপে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে কিছুটা চাপে রেখেছে। তবে আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্স ভবিষ্যতের ম্যাচগুলোতে দলকে উজ্জীবিত করতে পারে। কোচ কাবরেরার পরবর্তী কৌশল ও স্কোয়াড ব্যবস্থাপনা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে পরবর্তী ম্যাচের জন্য।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url